Revolutionary democratic transformation towards socialism

নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটন ও দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিহত সকল শ্রমিক পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি


বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে রূপগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মিভূত সেজান জুস কারখানা পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে আজ ১৪ জুলাই ২০২১ দুপুর ১২টায় মৈত্রী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, ইউসিএলবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড বাচ্চু ভুইয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কমরেড শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কমরেড হামিদুল হক, সিপিবির আব্দুল্লাহ কাফি রতন, বাসদের রাজেকুজ্জামান রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আকবর খান, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আব্দুল আলী।

গত ১২ জুলাই বাম জোটের একটি প্রতিনিধি দল রূপগঞ্জের কর্ণঘোপে সেজান জুস কারখানা সরেজমিন পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে নেতৃবৃন্দ দেখেন কারখানাটি চলছিল সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। কোনো নিয়ম-কানুনের বালাই ছিল না। বিল্ডিং কোড মানা হয়নি ভবন নির্মাণে, অগ্নি নির্বাপনের জন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সিড়ি অপ্রশস্ত, অন্ধকার এবং তালাবদ্ধ ছিল। নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হতো। অর্থাৎ শ্রম আইন, শিল্প আইন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করা হয়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৫ বছরে ফায়ার সার্ভিসের হিসাব মতে গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৫৮৩৪টি। এ যাবৎ যতগুলো কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, ভবন ধস, বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সবগুলোর মালিক সরকার এবং সরকারি দল সংশ্লিষ্ট হওয়ায় কোনোটিরই বিচার বা শাস্তি হয়নি। সেজানের মালিকও আওয়ামী লীগের টিকিটে লক্ষ্মীপুর থেকে সংসদ নির্বাচন করেছিলেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের তদারককারী সংস্থার অবহেলা, দুর্নীতি, অনিয়মের কারণে আইন না মেনে কারখানা চালু রাখার দুঃসাহস দেখাতে পারে মালিকেরা। ফলে সরকারিভাবে ৩/৪টি তদন্ত কমিটি গঠন হলেও তার প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নাই কারণ যারা অভিযুক্ত তাদের তদন্তে সঠিক ঘটনা বেরিয়ে আসবে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ পর্যন্ত কোনো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার ও শাস্তি না হওয়ায় একের পর এক শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলছে। এর অবসান হওয়া দরকার। নেতৃবৃন্দ অগ্নিকাণ্ডের জন্য দায়ী মালিক ও কারখানা পরিদর্শকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের শাস্তি; নিহত শ্রমিকদের পরিবার প্রতি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহত শ্রমিকদের উন্নত চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান; নিখোঁজ শ্রমিকদের খুঁজে বের করা এবং নিহত-আহত-নিখোঁজ শ্রমিকদের প্রকৃত তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানান। একই সাথে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন ও দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনা; ঈদের পূর্বেই সকল শ্রমিকের বকেয়া বেতন-বোনাস-ওভারটাইম পরিশোধ করার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলন থেকে উপরোক্ত দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখা, ঈদের আগেই কারখান গেটে শ্রমিক জনসভা এবং ঈদের পর শ্রম মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়া হয়।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..