Revolutionary democratic transformation towards socialism

ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, দুর্নীতি অপচয় বন্ধ ও বিভিন্ন প্রজেক্টের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি


রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কমলাপুর রেল স্টেশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে গেছে। এরপর গণপরিবহন রেলের টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও অতিষ্ঠ করে তুলবে। পণ্যের পরিবহন ব্যয় বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের উপর বর্তাবে।

নেতৃবৃন্দ এই ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, রেলের অপচয়, দুর্নীতি অব্যবস্থাপনা দূর, এর সাথে জড়িতদের শাস্তি এবং রেলের বিভিন্ন প্রজেক্টের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান।

আজ ৩ মে ২০২৪, শুক্রবার, সকাল ৯টায়, কমলাপুর রেল স্টেশন প্রাঙ্গণে সিপিবি আয়োজিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার ও কাজী রুহুল আমিন।

সমাবেশে সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, বড় বড় প্রজেক্টের নামে রেলকে আধুনিকায়ন করার কথা বলা হচ্ছে অথচ এই টাকার যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। দেশের টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ঋণ খেলাপিদের দৌরত্ম্যে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকার এদেরই পোষণ করে চলছে। সরকার শুধু সিন্ডিকেটের পাহারাদারই নয়, সিন্ডিকেটেরই অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী আখ্যায়িত করে, এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, সরকার ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে সারাদেশে এই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দুর্নীতি অপচয় ও ব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলে রেলকে আরও লাভজনক খাতে পরিণত করা যেত। এটি না করে রেলের ভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে দুর্নীতিবাজদেরই দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এসব প্রোজেক্টের ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নেই।

তিনি রেলের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক, অন্যায় ও গণবিরোধী আখ্যায়িত করে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও সব প্রোজেক্টের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। তিনি রেলের দখলকৃত জমি উদ্ধার ও দুর্নীতিমুক্ত ভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবহারের দাবি জানান।

তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে নৌ-খাতকে ধ্বংস করা হয়েছে। রেলপথে খরচ বৃদ্ধি ও সংকুচিত করে রোড সিন্ডিকেট এবং বাস মালিকদের সুবিধা দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। রেলের ভাড়া বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, রেলে পদ খালি থাকলেও নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। বেসরকারি খাতে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের শত শত কোটি টাকা মুনাফা ও লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

সমাবেশে সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ বলেন, এই সরকার মূল্য বৃদ্ধির সরকার। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকার। জনগণের উপরে নির্যাতন নিষ্পেষণ যেমন চলছে, একইসাথে মূল্যবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটার মহোৎসব করে চলেছে সরকার।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কমলাপুর রেলস্টেশন চত্বর প্রদক্ষিণ করে।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..